সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্ব পর্যটন দিবসে বাংলাদেশ
পিসিবার্তা ডেস্ক :
- আপডেট সময় : ১০:৪১:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৩৯৪ বার পঠিত
উৎসবে মেতেছে কক্সবাজার
বিশ্ব পর্যটন দিবসকে কেন্দ্র করে সপ্তাহব্যাপী পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভালে মেতেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) প্রথম দিনই উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে সৈকতের লাবণী পয়েন্ট। রঙিন ছাতা, বালু ভাস্কর্য, বালুচরে প্রজাপতি কিংবা সার্ফিং বোটের ফটো কার্ডে মুগ্ধ পর্যটকরা
বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, সৈকতপাড়ে রঙিন ছাতার স্পট; ছাতা একটু ওপরে হলেও নিচে লেগেছে মানুষের ভিড়। সবাই ব্যস্ত ছাতার নিচে সেলফি তুলতে।
সৈকতের বালুচরে শোভা পাচ্ছে বালু ভাস্কর্য। রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাস্কর্য। এখানেও মানুষের ভিড়। কেউ বালু ভাস্কর্য দেখছেন আবার কেউ কেউ ছবি তুলছেন।আর একটু সামনে গেলেই সৈকতের সামনে স্থাপন করা হয়েছে নানা রঙের ফটোকার্ড। রয়েছে প্রজাপতি, সার্ফিং বোট, ডলফিন ও দোলনা। সেখানেও সকল বয়সী মানুষের ভিড় ছবি তুলতে। আগতরা বলছেন, অন্যরকম কক্সবাজার দেখছেন তারা।রঙিন ছাতার নিচে ছবি তুলতে ব্যস্ত রাফি বলেন, রঙিন ছাতাগুলো খুবই সুন্দর লাগছে। তাই বন্ধু শফিকে নিয়ে ছবি তুলতে এসেছি। অনেকগুলো ছবি তুলেছি, যা ফেসবুকে আপলোড করব।
সাভার থেকে আসা পর্যটক রিয়াদ আহমেদ বলেন, বালিয়াড়িতে বালু ভাস্কর্য তাও আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। এটা পর্যটন মেলা ভিন্নতা এনেছে। একই সঙ্গে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও বালু ভাস্কর্য। ভাস্কর্য সঙ্গে নিয়ে ছবি তুললাম।
ফটোকার্ডে ছবি তোলা রিশাত, হামিদ ও নাদিয়া বলেন, বিশাল সৈকতকে পেছনে রেখে ছবি তুলছি। যা স্মৃতি হিসেবে রেখে দিব। বিশেষ করে, সূর্যাস্তের সঙ্গে ফটোকার্ডে ছবি তুলে অন্যরকম মজা পেয়েছি।
তিন রাস্তার মোড়ে ঐতিহ্যবাহী নৌকাতে পান বিক্রি করছেন পর্যটন ব্যবসায়ী কাজল। তিনি বলেন, কক্সবাজারের ঐতিহ্য হচ্ছে মহেশখালীর মিষ্টি পান। এটা দিয়ে কক্সবাজারকে ব্র্যান্ডিং করার চেষ্টা করছি।
তারকামানের হোটেলের এক ব্যবস্থাপক বলেন, আগামীতে পর্যটকের নতুন গন্তব্য হতে যাচ্ছে কক্সবাজার। তাই কক্সবাজারকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে মেলায় অংশগ্রহণ।
আর প্রশাসন বলছে, পর্যটকদের আনন্দে মাতিয়ে রাখতে সব আয়োজন করেছেন তারা। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, আগামী সাত দিন পর্যটকদের আনন্দ মাতিয়ে রাখব। যার জন্য সকল আয়োজন করা হয়েছে। একই সঙ্গে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, জেলা পুলিশ, র্যাব ও জেলা প্রশাসন সমন্বয় করে কাজ করছে। পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়াতে পারবেন কক্সবাজারে।
সন্ধ্যা না হতে সব মানুষ ভিড় বালিয়াড়ির মঞ্চে। নাচে-গানে মেতে উঠেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভ্রমণপিপাসুরা।
এদিকে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি লাবনী পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে সুগন্ধা পয়েন্ট ঘুরে আবারও লাবনী পয়েন্টে এসে শেষ হয়। এ র্যালিতে সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ, রাজনীতিবিদের পাশাপাশি হোটেল মোটেল, রেস্তোরাঁ, ট্যুর অপারেটরসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকল স্টক হোল্ডাররা ঘোড়ার গাড়ি, ব্যানার, ফেস্টুনসহ বিভিন্ন রঙবেরঙয়ের প্ল্যাকার্ড ও গাড়ি নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। প্রায় ১০ হাজারের বেশি পর্যটনসেবী র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
এরপর সকাল ১০টায় লাবণী পয়েন্টের বালিয়াড়িতে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সাত দিনব্যাপী পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভালের উদ্বোধন করা হয়। এসময় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, সংসদ সদস্য জাফর আলম, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম, টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন শেষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচিতে থাকছে সার্কাস প্রদর্শনী, বীচ বাইক র্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ডিজে শো, আতশবাজি, রোড শো, সেমিনার, ঘুড়ি উৎসব, ম্যাজিক শো, ফায়ার স্পিন, লাইফ গার্ড রেসকিউ প্রদর্শনী, ফানুস উৎসব, সার্ফিং প্রদর্শনী, বীচ ম্যারাথন, বীচ ভলিবল ও কনসার্টসহ নানা অনুষ্ঠান। এই বর্ণিল আয়োজন চলবে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত। এদিকে বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর রয়েছে টানা তিন দিনের ছুটি। এই ছুটিকে কেন্দ্র করে লাখো পর্যটকের সমাগমের আশা পর্যটন ব্যবসায়ীরা।