খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু
- আপডেট সময় : ১০:৫৪:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল ২০২৩ ৬১৪ বার পঠিত
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ। বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে এক শিশুর জন্ম হলো। নাম খোকা। গ্রামের মানুষ ছাড়া কেউ তার জন্মের কথা জানেনি।
এর পঞ্চান্ন বছর পর যখন সেই খোকার মৃত্যু হলো, স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, ঘাতকদলের হাতে মর্মান্তিক মৃত্যু, তখন সারা বিশ্ব শোকে আচ্ছন্ন হয়েছে। তিনি তখন টুঙ্গিপাড়ার খোকা নন, সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত একটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু।
তার মৃত্যুতে ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড উইলসন লন্ডনে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি নেতার কাছে লেখা চিঠিতে বলেছেন, ‘It is a great national tragedy for you, but a personal tragedy for me.’ (এটা তোমাদের জন্য এক বিরাট জাতীয় ট্র্যাজেডি; কিন্তু আমার কাছে একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি)। ব্রিটিশ হাউজ অব লর্ডস-এর এক মানবতাবাদী সদস্য বলেছেন, ‘পৃথিবীর বহু নেতা তার দেশকে স্বাধীন করেছেন; কিন্তু শেখ মুজিব তার দেশকে দুবার স্বাধীন করেছেন।’
বিশ শতকের সত্তরের দশকের বিশ্বনেতাদের কাছে টুঙ্গিপাড়ার সেই খোকা হয়ে উঠেছিলেন এক অপরাজেয় বীর। ফিদেল ক্যাস্ত্রো তার সম্পর্কে বলেছেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি, শেখ মুজিবকে দেখেছি।’
লন্ডনের সানডে অবজারভারে তাকে বলা হয়েছে ‘পোয়েট অব পলিটিকস’-রাজনীতির কবি। এ কবির ডাকে সাড়ে সাত কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতালাভের যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মধ্যযুগীয় একটি ধর্মীয় রাষ্ট্রের কাঠামো ভেঙে বেরিয়ে এসেছিল স্বাধীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। যার চারটি রাষ্ট্রীয় ভিত্তি-গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।
এক মার্কিন সাংবাদিক বিস্ময় প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘আমার কাছে বিস্ময় লাগে, উপমহাদেশটির রাজনীতির ভিত্তিই যেখানে ধর্ম, গান্ধী ও জিন্নার মতো পাশ্চাত্য শিক্ষিত নেতারাও যেখানে ধর্মীয় রাজনীতির প্রভাব এড়াতে না পেরে তার কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন, দেশটাকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করেছেন, সেখানে দেশ দুটিতে ধর্মীয় জাতীয়তার উন্মাদনা শেষ না-হতেই নিুমধ্যবিত্ত পরিবারের এক যুবক কী করে ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তার ডাক দিয়ে তার দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করলেন এবং একটি ধর্মনিরপেক্ষ জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ঘটালেন। সাবেক মুসলিম লীগপন্থিদের প্রতিষ্ঠান বিএনপি এবং মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে প্রতিক্রিয়াশীল আরব শেখদের অর্থে পরিচালিত জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশে একটি গৃহযুদ্ধ বাধাতে সক্ষম বলে অনেকে ভেবেছিলেন। কিন্তু বাঙালি মুসলমানরা তাদের ডাকে সাড়া দেননি। ফলে বিএনপি ও জামায়াতকে গোপন ষড়যন্ত্র ও গোপন হত্যাকাণ্ডের পথে যেতে হয়েছে। তাতে তারা সাময়িক সাফল্য পেয়েছে; কিন্তু স্থায়ী কোনো সাফল্য পায়নি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তারা এখন পরাজিত শক্তি। শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র এখনো একটি নাম সাড়া জাগায়-শেখ সাহেব।’
মার্কিন সাংবাদিকের এ পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত সঠিক। টুঙ্গিপাড়ার খোকা পরে হলেন বাংলাদেশের শেখ সাহেব। তারপর বিশ্বনেতা। এক পর্যায়ে হলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধু। জুলিও কুরি বিশ্ব শান্তিপদক লাভের সময় টুঙ্গিপাড়ার খোকাকে সম্বোধন করা হলো বিশ্ববন্ধু হিসাবে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফজলুল হক পরিচিত হয়েছিলেন ‘হক সাহেব’ নামে। হক সাহেব বলা হলে একমাত্র ফজলুল হককে বোঝানো হতো। তেমনি পরবর্তীকালে একটি নাম সারা বাংলায় পরিচিত ও প্রচারিত হয়েছিল, সেটি শেখ সাহেব। শেখ সাহেব বললে আর কোনো শেখকে নয়, একমাত্র শেখ মুজিবুর রহমানকেই লোকে চেনে।
তার জীবনকাল মাত্র পঞ্চান্ন বছর। এ পঞ্চান্ন বছরে তিনি ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদকে সুপ্রতিষ্ঠা দিয়েছেন। অবলুপ্ত বাংলাদেশ ও বাঙালি এ দুটি নামের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঘটিয়েছেন। বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছেন। বাঙালি নামে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাঙালি জাতির অস্তিত্ব উদ্ধার করেছেন।
কবে কোন পালরাজাদের আমলে বাংলাদেশ স্বাধীন ছিল, তারপর হাজার বছর ধরে বাঙালি দাস জাতি পরাধীন। কখনো দিল্লির ব্রাহ্মশক্তি, কখনো তুর্কি, পাঠান, মোগল, ইংরেজরা; শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের পাঞ্জাবি শাসকরা দেশটাকে তাদের শোষণ ও শাসনের লীলাভূমি করে রেখেছিল। বাংলাদেশের জাতীয় নেতৃত্ব এদিকে বহুদিন দৃষ্টি দেননি। তারা তুরস্কের মধ্যযুগীয় খেলাফত উদ্ধার, অসহযোগ দ্বারা ইংরেজ রাজত্ব উচ্ছেদ ইত্যাদি স্বপ্নে বিভোর ছিলেন।
লক্ষ করার বিষয়, শেখ মুজিবুর রহমান যে বছর (১৯২০) জন্মগ্রহণ করেন, তার আগের বছর (১৯১৯) প্রথম মহাযুদ্ধ শেষ হয়। কথা ছিল যুদ্ধ শেষে ইংরেজরা ভারতবাসীকে স্বায়ত্তশাসনাধিকার দেবে।
তারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করায় গান্ধীর নির্দেশে কংগ্রেস অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে। অন্যদিকে এ অসহযোগ আন্দোলনকে সহায়তাদানের জন্য ভারতের মুসলমানরা খেলাফত আন্দোলন শুরু করেন। অসহযোগ ও খেলাফত এ যুগপৎ আন্দোলনে অবিভক্ত ভারতের অন্যান্য অংশের মতো অবিভক্ত বাংলাদেশও উত্তপ্ত, সেই উত্তাপের মধ্যে টুঙ্গিপাড়ার খোকার শৈশব ও কৈশোর কাটে। এ রাজনৈতিক উত্তাপ তাকেও স্পর্শ করে।
কৈশোরে নিজের অজান্তেই তিনি মানুষকে ভালোবাসতে শেখেন। সমাজের স্বার্থান্ধ শোষকদের ঘৃণা করতে শেখেন। জমিদার ও জোতদার এবং মহাজনদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে শোষিত গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে তখন থেকেই তাকে দেখা যায়। এ জন্য তিনি কারাবরণও করেছেন। কিশোর মুজিবের মধ্যে এ তেজস্বিতা দেখেই শহীদ সোহরাওয়ার্দী তার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন এবং কলকাতায় তাকে ডেকে এনে তার রাজনীতিতে দীক্ষা দিতে চেয়েছিলেন।
এটা সাধারণ্যে প্রচারিত, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক গুরু ছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। কথাটা সর্বাংশে সঠিক নয়। শহীদ সোহরাওয়ার্দী শেখ মুজিবের রাজনৈতিক অভিভাবক ছিলেন। কিন্তু শেখ মুজিবের রাজনৈতিক মানস তৈরি হয়েছিল মূলত ফজলুল হক, আবুল হাশিম, সুভাষ বসু ও মওলানা ভাসানীর চিন্তাধারা ও কার্যক্রম দ্বারা। ফজলুল হক সেই সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ডামাডোলের মাঝখানেও প্রথম যে রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন, তার নাম দিয়েছিলেন নিখিল বঙ্গকৃষক প্রজা পার্টি।
ফজলুল হক পরে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করেছেন, কিন্তু প্রথম রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন অসাম্প্রদায়িক নামে। দলের উদ্দেশ্য ছিল দরিদ্র কৃষক প্রজার দারিদ্র্য মোচন।
ফজলুল হকের প্রথমদিকের রাজনৈতিক চিন্তাধারা কিছুটা হলেও শেখ মুজিবকে প্রভাবিত করেছে। তার প্রমাণ, সুযোগ পাওয়া মাত্র মওলানা ভাসানীর সহযোগিতায় আওয়ামী লীগকে অসাম্প্রদায়িক করা এবং পরে আওয়ামী লীগের নামের সঙ্গে কৃষক শ্রমিক কথাটার মিলও ঘটানো। শেখ সাহেবের রাজনীতিরও মূল উদ্দেশ্য ছিল শোষিতের পক্ষ নিয়ে লড়াই করা। আমার ধারণা, তিনি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ এবং সুভাষ বসুর অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতার আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হন।
১৯৪৭ সালে ভারতভাগের প্রাক্কালে মুসলিম লীগের প্রগতিশীল অংশের আবুল হাশিম এবং কংগ্রেসের শরত বসু মিলে ভারত ও পাকিস্তান ডমিনিয়নের বাইরে যে স্বাধীন যুক্তবাংলা গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তা শেখ সাহেবকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে। তিনি তখন থেকেই স্বাধীন বাংলা গঠনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন এবং কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমানে মওলানা আবুল কালাম আজাদ কলেজ) ছাত্র থাকাকালেই বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করাসহ স্বাধীন বাংলা গঠনের কথা বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতিতে প্রকাশ করেছেন।
পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতেও লক্ষণীয়, শেখ মুজিব কখনো শহীদ সোহরাওয়ার্দীর রক্ষণশীল রাজনীতির অভিভাবকত্ব ত্যাগ করেননি, বৃহত্তর রাজনৈতিক কৌশল ও স্বার্থের জন্য। কিন্তু শুরু থেকেই মওলানা ভাসানীর প্রগতিশীল রাজনীতিতে সহযোদ্ধা ছিলেন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, রবীন্দ্রসংগীত রক্ষার আন্দোলন, বাংলা হরফ রক্ষার আন্দোলন, যুক্ত নির্বাচন প্রবর্তনের আন্দোলন ইত্যাদি প্রতিটি আন্দোলনে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নীতি ও নির্দেশ মানলে এই আন্দোলনগুলোয় তিনি নেতৃত্ব দিতে পারতেন না এবং এই আন্দোলনগুলোও সম্ভবত সফল হতো না।
তিনি যে পরবর্তীকালে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তিদাতা হবেন তার প্রমাণ দেন তার দুই অর্থনীতির আন্দোলনে। তিনিই পাকিস্তান আমলের প্রথম বাঙালি নেতা যিনি ঘোষণা করেন, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। সুতরাং পাকিস্তানের দুই এলাকার জন্য দুই পৃথক অর্থনীতি গ্রহণ করতে হবে।
পূর্ব পাকিস্তানে যেহেতু চাষের জমি কম, সে জন্য এই এলাকায় শিল্পোন্নয়নের ওপর জোর দিতে হবে। অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তানে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ অনেক বেশি, সে জন্য সেখানে কৃষি উন্নয়নের ওপর জোর দিতে হবে। এ দাবির পক্ষে আন্দোলন পরিচালনার জন্য তিনি ‘নতুন দিন’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন এবং ঢাকার মাহবুব আলী ইনস্টিটিউটে একটি অর্থনৈতিক সম্মেলন করেন। তার এই দুই অর্থনীতির দাবিই কালক্রমে ছয় দফার দাবিতে রূপান্তরিত হয়, যা বাংলাদেশের ম্যাগনাকার্টা বা মুক্তিসনদ নামে আজ পরিচিত। সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রামের সূচনা এই ছয় দফা থেকেই।
এটা অত্যুক্তি নয়, ক্ষুদিরামের মতোই তিনি ফাঁসির মঞ্চকে ভয় পাননি। আজকাল অনেক ডান ও বামপন্থি নেতা অভিযোগ তোলেন, শেখ মুজিব তার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতা ঘোষণা করেননি। এ অভিযোগ যারা তুলছেন, সেসব নেতা সেদিন স্বাধীনতা শব্দটি উচ্চারণেও ভীত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু সেখানে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন: ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
এটা স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না-হতে পারে; কিন্তু এর চেয়ে পরিষ্কারভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা আর কী হতে পারে?
আওয়ামী লীগের জন্ম একটি সাম্প্রদায়িক বুর্জোয়া রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে। মওলানা ভাসানীর সহযোগিতায় শেখ মুজিব সেই দলকে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলে রূপান্তর করেন।
তারপর আওয়ামী লীগের আবারও চারিত্রিক রূপান্তর ঘটে, যখন সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে আওয়ামী লীগের লক্ষ্য বলে ঘোষণা করা হয়। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের চরিত্রে আবারও রূপান্তর ঘটান। তার পেটি-বুর্জোয়া চরিত্র ভাঙার জন্য দলের নামে কৃষক শ্রমিক কথা দুটি গ্রহণ করেন এবং দলের বুর্জোয়া চরিত্র সংশোধনের চেষ্টা করেন।
এখানে এসেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিষাদসিন্ধুর অবতারণা। বঙ্গবন্ধু ও তার সহযোদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। নতুন রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতন্ত্রী চরিত্র ধ্বংস করা হয়। প্রতিবিপ্লবী শক্তি বাংলাদেশে ক্ষমতা দখল করে। এক্ষেত্রেও একটি বিশেষ ব্যাপার লক্ষণীয়। স্বাধীন বাংলাদেশে মওলানা ভাসানী এবং তার শক্তিশালী ন্যাপ দল তখন বেঁচে থাকা সত্ত্বেও তারা বঙ্গবন্ধুর শূন্য আসনটি দখল করতে পারেননি।
পারেননি মণি সিংহ কমিউনিস্ট পার্টি বা তাদের কোলের মুজাফ্ফর ন্যাপ। স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামে এবং দেশে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিতে হয়েছে মুজিবকন্যা শেখ হাসিনাকে। সব প্রতিবিপ্লবী চক্রান্ত ব্যর্থ করে; ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগই আজ ক্ষমতায়।
গত বছর ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর বছর। মুজিববর্ষ। এ বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। দুটি ঐতিহাসিক উৎসবই পালিত হয়েছে এবং হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের তত্ত্বাবধানে। বঙ্গবন্ধু আজ জাতির পিতার মর্যাদায় সগৌরবে অধিষ্ঠিত। বাংলাদেশ আজ আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে টেক্কা মারা একটি দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতির দেশ। শেখ হাসিনা আজ আর শুধু বাংলাদেশের নেতা নয়, সারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একজন প্রভাবশালী নেতা।
ইতিহাস কী বলে? বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এ দুটি নাম আজ অচ্ছেদ্য। বাংলাদেশের রাজনীতিতে টুঙ্গিপাড়ার খোকা আজ বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ আত্মাহুতি দিয়েছেন তার নামে, লক্ষ বীরনারী সম্ভ্রম বিসর্জন দিয়েছেন তার ডাকে। ইতিহাসের নিজের হাতে গড়া নেতা তিনি। আবার তিনি নিজের হাতে নতুন ইতিহাস তৈরি করে গেছেন।