বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আসিফের বাড়িতে বাম জোট নেতৃবৃন্দ
- আপডেট সময় : ০৮:৩৫:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪ ১৫৭ বার পঠিত
কোটা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহত সাতক্ষীরার কৃতিছাত্র নিহত আসিফ হাসানের স্বজনদের পাশে দাঁড়াতে আজ ৩০ জুলাই ২০২৪, দুপুরে দেবহাটা উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের আস্কাপুর গ্রামে উপস্থিত হন বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশ জাসাদ এবং উদীচী নেতৃবৃন্দ। গত ১৮ জুলাই ২০২৪, পুলিশের গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী আসিফ হাসানের কবর প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন ও তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়। এ সময় জেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টী- সিপিবির সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি কমরেড আবুল হোসেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদ, সাতক্ষীরা জেলা সমন্বয়ক কমরেড নিত্যানন্দ সরকার, বাংলাদেশ জাসদ সাতক্ষীরা জেলা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইদ্রিস আলি এবং উদীচীর সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান।
সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশে কোটা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়লে অন্যান্যদের মতো সাতক্ষীরার সাহসী তরুণ, ঢাকা নর্দান ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আসিফ হাসান সেই ছাত্র বিক্ষোভে অংশ নেয়। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-সবাবেশে লাঠি-রড, ধারালো দেশী অস্ত্র নিয়ে হামলা করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী গুণ্ডারা। পুলিশ আক্রান্ত সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের রক্ষা না করে, উল্টো ছাত্রদের ছাত্রভঙ্গ করার নামে লাঠিচার্জ, টিয়ার সেলের নিক্ষেপের সাথে নির্বিচারে গুলিছোড়ে। ফলে ১৮ জুলাই ২০২৪, ধারালো অস্ত্রের আগাতে ও পুলিশের গুলিতে ঢাকায় ৮ জন নির্মমভাবে নিহত হয়। তাদের মধ্যে অন্যমত সাতক্ষীরার মেধাবী ছাত্র আসিফও ছিল।
নিহত আসিফ হাসান সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের আস্কাপুর গ্রামের মাহমুদ আলম ও মরহুমা মরিয়ম বেগমের জেষ্ঠ্য পুত্র। সন্তান হারিয়ে বিহ্বল মাহমুদুল হাসান সম্পূর্ণরূপে নির্বাক পাথার হয়ে গেছেন। আসিফ হাসানের ছোট ভাই সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ছাত্র রাকিব হাসানও বড় ভাইকে হারিয়ে একদম দিশেহারা।
আসিফ হাসান পাঁচ ভাই বোনের ৪র্থ এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে বড়। আস্কাপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত কৃষক, আসিফ হাসানের বাবা মাহমুদ আলম সরকারের কাছে প্রত্যাশা করেন, তাঁর সন্তানের মতো আর যেন কোন ছাত্রকে অকালে প্রাণ না হারাতে হয়। আর যেন কোন বাবা-মায়ের কোল খালী করা না হয়।
নিহত আসিফের বাড়ি থেকে ফিরে বাম জোট নেতৃবৃন্দ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় জানান অবিলম্বে আসিফ হত্যার বিচার করতে হবে। প্রতিক্রিয়ায় সিবিপি সভাপতি কমরেড আবুল হোসেন বলেন, সারা দেশের কোটা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণসহ হত্যাকারীদের বিচারের আওয়াতায় এনে কঠোর শস্তি দিতে হবে। বাসন আহ্বায়ক কমরেড নিত্যানন্দ সরকার বলেন, অবিলম্বে সারা দেশে গ্রেফতার-গণগ্রেফতার ও দমন-পীড়ন নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। নিরাপত্তা হেফাজাতের নামে অঘোষিত ডিটেনশনে রাখা যাবে না। বাংলাদেশ জাসদ সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইদ্রিস আলি বলেন, ছাত্র আন্দোলনের সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ধ্বংসযজ্ঞের দায় তদন্ত ছাড়াই ঢালাওভাবে কারর ওপরে চাপিয়ে নিরাপরাধ ছাত্র-জনতাকে হয়রানী ও পুলিশের গ্রেফতার নৈরাজ্য বন্ধ করতে হবে। উদাীচী সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান সরকারের সমালোচনা করে বলেন, কোন সভ্য দেশে নির্বিচারে মানুষ হত্য কাম্য নয়।
উল্লেখ্য কোটা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আসিফের লাশ পরদিন গভীর রাতে সাতক্ষীরায় পৌছুলে ভোরে পুলিশের উপস্থিতিতে যানাজা ও দাফন সম্পন্ন করা হয়। তার পরিবারের সদস্যরা এখনও এক অজানা ভয় ও উৎকণ্ঠার মধ্যে আছে।