ডিবি হেফাজতে ৩২ ঘণ্টা অনসনে ছিলেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক
- আপডেট সময় : ০৮:৩৫:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪ ১০৪ বার পঠিত
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজতে থাকার সময় ৩২ ঘণ্টা অনশন করেছেন বলে জানিয়েছেন এক সমন্বয়ক। আজ বৃস্পতিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিবি কার্যালয় থেকে এক আত্মীয়ের বাসায় উঠেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। সেখান থেকেই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘সাত দিন এক ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম। তারপর লাস্ট ৩২ ঘণ্টা ধরে অনশন। একটু স্বাভাবিক হয়ে সবাই মিলে একটা লিখিত বক্তব্য দেব।’
ডিবি কার্যালয়ে অনশনের কথা জানান আরেক সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের বাবা বদরুল ইসলাম। ছেলেকে নিয়ে ডিবি কার্যালয় থেকে ফেরার পথে সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান তিনি।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে রাজপথে সোচ্চার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিনও ডিবি কার্যালয়ে সম্বয়কদের অনশনের তথ্য নিশ্চিত করেন। আজ সুপ্রিম কোর্টের সামনে তিনি বলেন, ‘অনশনের খবরটি আমি দুটি সূত্র থেকে পেয়েছি। তারা ৩২ ঘণ্টা ধরে অনশন করেছিলেন বলে জানতে পেরেছি। তারা বেরিয়ে আসলে আরও পরিষ্কারভাবে সব জানা যাবে।’
এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘আমার আসলে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার কথা মনে পড়েছে। পত্রিকায় তার লেখার জন্য তাকে আটক করা হয়েছিল। আপনারা জানেন “আনন্দময়ীর আগমনে” কবিতার জন্য তাকে আটক করা হয়েছিল। তারপর তিনি ৩৯ দিন অনশন করেছিলেন। তিনি হার মানেননি, আমাদের সন্তানরাও হার মানবে না।’
ডিবি কার্যালয়ে কেমন ছিলেন সমন্বয়করা
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘ডিবিতে ছয়জন আমরা একসঙ্গে ছিলাম না। খাওয়ার সময় এবং কনফারেন্সের সময় আমাদের দেখা হয়েছে। সেখানেও আমাদের সবার কথা-বার্তা হয় নাই। বিষয়গুলো নিয়ে আমরা একসঙ্গে বসে কথা বলব।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘ছয়জনকে ছয়ভাবে ট্রিট করেছে। আমি এমনও শুনছি যে, ঝুলাইয়া পিটাইছে। এখন সার্বিকভাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা সবাই এক সাথে কথা বলব। আর আমরা গত সাত-আট দিন দেশে কী হইছে, কিছুই জানি না।’
আন্দোলন চলবে
ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে ফেসবুক পোস্টে আন্দোলনের সম্বয়ক সারজিস আলম লেখেন, ‘এ পথ যেহেতু সত্যের পথ, ন্যায়ের পথ, তাই যেকোনো কিছু মোকাবিলা করতে আমরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নই। যতদিন না এ বাংলাদেশ আন্দোলনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে; গণগ্রেপ্তার, জুলুম, নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে, ততদিন এ লড়াই চলবে।’
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুলাই সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে হাসপাতাল থেকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে তুলে নেওয়া হয়। পরের দিন মো. সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ ও নুসরাত তাবাসসুমকে হেফাজতে নেয় ডিবি।
গত রবিবার ডিবি হেফাজতে থেকেই সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক।