সাতক্ষীরা ০২:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হেলিকাপ্টার দূর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিহত!

পিসিবার্তা ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০১:৩৯:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪ ৯৬ বার পঠিত
তেহরান: হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ে মৃত্যু হল ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমির-আবদোল্লাহিয়ান সহ নয়জন। মৃতদের মধ্যে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর সহ একাধিক শীর্ষ সরকারি আধিকারিক রয়েছেন। রবিবার জানা গিয়েছিল, খারাপ আবহাওয়ার জেরে আজারবাইজান সীমান্তের কাছে ঘন জঙ্গলে ‘হার্ড ল্যান্ডিং’ করেছে ইরানের প্রেসিডেন্টের কপ্টার। রবিবার পাশের দেশ আজারবাইজানের একটি বাঁধ উদ্বোধনে গিয়েছিলেন রাইসি। সেখান থেকে তেহরানে ফেরার পথে কপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। কিন্তু রাইসি বা কপ্টারের অন্য যাত্রীদের অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট কোনও তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না। উদ্ধারকারীদের দল ওই এলাকায় পাঠানো হয়। কিন্তু প্রচণ্ড কুয়াশা ও খারপ আবহাওয়ার জেরে প্রাথমিকভাবে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়। দুর্ঘটনার পিছনে ইজরায়েল ও আমেরিকার হাত থাকার জল্পনা রয়েছে।
সোমবার ইরান প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, ঘন জঙ্গলে প্রেসিডেন্টের কপ্টারের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছে। রাইসি সহ কপ্টারের সব যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। পরে রাইসি, বিদেশমন্ত্রী ও অন্য আধিকারিকদের দেহ উদ্ধার করা হয়। যদিও সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না বলে দেশবাসীকে আশ্বাস দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মনেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেই। ইরান সরকার জানিয়েছে,  পাঁচদিনের শোক পালন করা হবে। আপাতত ভাইস প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মোখবের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলাবেন। সোমবার রাইসির মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির আকস্মিক মৃত্যুতে শোকাহত ও স্তম্ভিত। ভারত-ইরান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করতে তাঁর ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
৬৩ বছরের রাইসি ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। খামেনেইয়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাইসিকে সর্বোচ্চ ধর্মগুরুর উত্তরসূরি হিসেবেও তুলে ধরা হচ্ছিল। আটের দশকে তেহরানে বিচারকের দায়িত্ব সামলেছেন রাইসি। সেই সময় কুখ্যাত ‘ডেথ কমিটি’র সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮৮ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে ৫ হাজারের বেশি মানুষকে বিচার না করেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এর জন্য রাইসির নাম হয় ‘তেহরানের কসাই’।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। দেশে কড়া শরিয়তি আইন প্রয়োগ, সরকার বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধে দমনপীড়ন শুরু হয়। পুলিস হেফাজতে তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর পর দেশজুড়ে যে আন্দোলন শুরু হয়, তাকেও কড়া হাতে দমন করেছিলেন রাইসি। গত মাসে রাইসির নির্দেশেই ইজরায়েলে ড্রোন হামলা চালায় ইরান। কপ্টার ভেঙে পড়ার পিছনে ইজরায়েল বা আমেরিকার হাত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে, রাইসির কপ্টার ভাঙার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ইরানে উত্সবের ছবিও দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বাজি ফাটানোর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় ইরানের বাসিন্দাদের একাংশকে। রাইসির মতো চরমপন্থী নেতার মৃত্যুতে খুশি হয়েছেন বলেও খোলাখুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় মতামত জানিয়েছেন অনেকে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

হেলিকাপ্টার দূর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিহত!

আপডেট সময় : ০১:৩৯:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪
তেহরান: হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ে মৃত্যু হল ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমির-আবদোল্লাহিয়ান সহ নয়জন। মৃতদের মধ্যে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর সহ একাধিক শীর্ষ সরকারি আধিকারিক রয়েছেন। রবিবার জানা গিয়েছিল, খারাপ আবহাওয়ার জেরে আজারবাইজান সীমান্তের কাছে ঘন জঙ্গলে ‘হার্ড ল্যান্ডিং’ করেছে ইরানের প্রেসিডেন্টের কপ্টার। রবিবার পাশের দেশ আজারবাইজানের একটি বাঁধ উদ্বোধনে গিয়েছিলেন রাইসি। সেখান থেকে তেহরানে ফেরার পথে কপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। কিন্তু রাইসি বা কপ্টারের অন্য যাত্রীদের অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট কোনও তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না। উদ্ধারকারীদের দল ওই এলাকায় পাঠানো হয়। কিন্তু প্রচণ্ড কুয়াশা ও খারপ আবহাওয়ার জেরে প্রাথমিকভাবে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়। দুর্ঘটনার পিছনে ইজরায়েল ও আমেরিকার হাত থাকার জল্পনা রয়েছে।
সোমবার ইরান প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, ঘন জঙ্গলে প্রেসিডেন্টের কপ্টারের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছে। রাইসি সহ কপ্টারের সব যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। পরে রাইসি, বিদেশমন্ত্রী ও অন্য আধিকারিকদের দেহ উদ্ধার করা হয়। যদিও সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না বলে দেশবাসীকে আশ্বাস দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মনেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেই। ইরান সরকার জানিয়েছে,  পাঁচদিনের শোক পালন করা হবে। আপাতত ভাইস প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মোখবের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলাবেন। সোমবার রাইসির মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির আকস্মিক মৃত্যুতে শোকাহত ও স্তম্ভিত। ভারত-ইরান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করতে তাঁর ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
৬৩ বছরের রাইসি ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। খামেনেইয়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাইসিকে সর্বোচ্চ ধর্মগুরুর উত্তরসূরি হিসেবেও তুলে ধরা হচ্ছিল। আটের দশকে তেহরানে বিচারকের দায়িত্ব সামলেছেন রাইসি। সেই সময় কুখ্যাত ‘ডেথ কমিটি’র সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮৮ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে ৫ হাজারের বেশি মানুষকে বিচার না করেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এর জন্য রাইসির নাম হয় ‘তেহরানের কসাই’।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। দেশে কড়া শরিয়তি আইন প্রয়োগ, সরকার বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধে দমনপীড়ন শুরু হয়। পুলিস হেফাজতে তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর পর দেশজুড়ে যে আন্দোলন শুরু হয়, তাকেও কড়া হাতে দমন করেছিলেন রাইসি। গত মাসে রাইসির নির্দেশেই ইজরায়েলে ড্রোন হামলা চালায় ইরান। কপ্টার ভেঙে পড়ার পিছনে ইজরায়েল বা আমেরিকার হাত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে, রাইসির কপ্টার ভাঙার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ইরানে উত্সবের ছবিও দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বাজি ফাটানোর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় ইরানের বাসিন্দাদের একাংশকে। রাইসির মতো চরমপন্থী নেতার মৃত্যুতে খুশি হয়েছেন বলেও খোলাখুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় মতামত জানিয়েছেন অনেকে।